
গাজা উপত্যকায় চলমান মানবিক সংকট ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, অঞ্চলটির এক-তৃতীয়াংশ মানুষ প্রতিদিন ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। খাবারের জন্য হাহাকার এখন প্রতিটি পরিবারে। অপুষ্টির কারণে শিশুরা মৃত্যুর মুখে, আর হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ পর্যন্ত নেই।
খাদ্য সংকটে প্রাণ যাচ্ছে শিশুর
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় অন্তত ৯০ হাজার নারী ও শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে, যাদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে মারা গেছে ৫ জন, যার মধ্যে ২ শিশু। একজন শিশুর বয়স ছিল মাত্র ৭ দিন।
এ পর্যন্ত অনাহারে মারা যাওয়া ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১২০ জন, যার মধ্যে ৮০ জনই শিশু।
ত্রাণ নয়, ঝুঁকি—বাঁচার সংগ্রামে মৃত্যু
গত কয়েক মাসে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ প্রায় বন্ধ। বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন নামক একটি সংস্থা সীমিত আকারে ত্রাণ পাঠালেও, সেই ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, পরিস্থিতি প্রতিদিন আরও সংকটময় হচ্ছে।
যুদ্ধ নয়, মানবিকতা চাই—বিশ্বজুড়ে চাপ
এই সংকটময় অবস্থায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই পথে হাঁটতে চাইছে যুক্তরাজ্যের একদল আইনপ্রণেতা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে ২২১ জন সংসদ সদস্য লিখিতভাবে অনুরোধ করেছেন—ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল এখনো যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আগ্রহ দেখায়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন, “হামাস যুদ্ধবিরতি চায় না, আমরা তাদের খুঁজে বের করব।”
জাতিসংঘের হুঁশিয়ারি
জাতিসংঘ, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ রাখাকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা বলছে, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করে ইসরায়েল যে অবরোধ অব্যাহত রেখেছে, তা অবিলম্বে তুলে নেওয়া উচিত।
শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৭ জুলাই ২০২৫
আপনার মতামত লিখুন